প্রজন্মের ঋণ শোধ ২৪ পর্ব

Posted: June 17, 2015 in Uncategorized

gfccfcআকাশে প্রচুর মেঘ উটকো বাতাসে মেঘেরা কখনো ডানে কখনো বা বায়ে প্রবাহিত হচ্ছে, সুযোগ পেলেই হঠাৎ মেঘেরা বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে কর্ম চঞ্চল মানুষগুলোকে এলো মেলো দিয়ে আবারও মেঘেরা খেলা করে এলো মেলো ভাবে খোলা বাতাসে।মেঘদের মতো সূর্য্যদের মনেও বাসা বাধে এক অজানা আতংক।চৌয়াল্লিশটি বছরের মনে লালিত কাঙ্খিত স্বপ্ন পূরণে হতাশা।মা জাহানারা ইমাম যা শুরু করে গিয়েছিলেন সেই নরপশু যুদ্ধাপরাধীদের বিচার তা এই নতুন প্রজন্মদের মাঝে ফেলিত দায়ীত্ত্ব পালনে তারা সংকল্পবদ্ধ।
রাজাকার মুজাহিদ এক জন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী তাকে বাচাতে উৎ পেতে আছে স্বদেশীয় কিছু নব্য রাজাকারের দল।ভাবতে অবাক লাগে তার সন্তান কি ভাবে তাকে পিতা বলে ডাকে!সে তো একজন অপরাধী তাও আবার যুদ্ধাপরাধী আজ রাজাকারদের সন্তানদের মনে যদি সামন্যতম দেশপ্রেম থাকত তবে হয়তো কেউ না কেউ পিতার বিরুদ্ধে দেশের পক্ষে কথা বলত তবে কালো রক্ত বলে কথা যা কখনোই লাল রক্তের সাথে মিশবে না।তাই নতুন প্রজন্মদের মাঝে এক ধরনের ভয় কাজ করছে, রাজাকাররা না হয় ফাসিতে ঝুললো কিন্তু তাদের সন্তানরা!তারাতো কোন একদিন তাদের অপরাধের কথা ভূলে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করবে পিতা বিয়োগের  প্রতিশোধ নেবার চেষ্টা করবে।তাই ভাবতে হবে রাজাকারদের সন্তানদের নিয়েও, তাদের আইনের আওতায় বন্দী করতে হবে যাতে তারা রাষ্ট্রের কোন গুরুত্ত্বপূর্ণ পদগুলিতে অধিষ্ঠিত হতে না পারে।

অনেক তাল বাহানার পর মুজাহিদীর ফাসির রায় কার্যকর বহাল রইল তাতে সাধারন জনতা একটি অস্বস্তিকর পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেলেন।তবে তাদের মরন কামর হরতাল নামক প্রায় অকেজু হওয়া কর্মসূচীটি দিলেন।আবারও হিংস্র হরতাল।মুজাহীদের ফাসির রায় বহালে দেশে বিভিন্ন সামাজিক সংঘটনগুলো শহরে সভা সমাবেশ করে সরকারকে এক প্রকার চাপে রাখেন ।সে রকম একটি সভা সমাবেশের আয়োজন করেছিলেন সূর্য্যের বন্ধুরা।সেই সমাবেশে আসছিলেন সমর মাঝ পথে তার পথ আটকায় কিছু অচেনা টুপি ওয়ালা তরুন।
-কি রে মালাউন কই যাস?তোদের নাস্তিকদের কাছে?তবে শোন,তোদের মতো কত আকাডাগোরে আমাগো বাপ দাদারা নাকানি চোবানি দিয়েছে আমরাও তোদের ছাড়বো না তবে সময় এলেই টের পাবি,বুঝলি?
-কি যা বলছেন,আর আপনারা কারা?আমিতো আপনাদের কাউকেই চিনি না।
তাদের মাঝ খান থেকে একজন তেরে এসে একেবারে সমরের মুখের সামনে মুখ রেখে বলল।
-চিনবি,সময় হলে চিনিয়ে দেবো,একেবারে চিরকালের জন্য।আর কতকাল তোরা ক্ষমতায় থাকবি,বল এক দিনতো সিংহাসন ছাড়তেই হবে তখন দেখবো কে কাকে বাচায়।
আরেক জন টুপি খোলে মাথার জট চুল গুলো পাকাতে পাকাতে হঠাৎ সমরকে চমকে দিতে মিছেমিছি বন্দুক বের করার অভিনয় করে যা বললো তাতে সমরকে জীবন সম্পর্কে ভীষন ভাবিয়ে তুলল।
-সালারে দিমুনি এহানেই হালাইয়া,,,,,লম্প যম্প কম দিস…দেখতেইতো পারছিস তগো মুক্তমনাগো কি ভাবে একে কোরবানী করতাছি,বিশেষ ভাবে চিন্তা কর তোদেরই দল ক্ষমতায় তারপরেও আমরাই শক্তিশালী,আর যদি ক্ষমতা চলে যায় তখন কি হবেরে চান্দু….কি হবে…যা যা ভালয় ভালয় কেটে পর।

একা ছিল বলে নিজেকে অসহায় লাগছিল।যাবার সুযোগ পেয়ে সে দ্রুত চলে আসেন তাদের সমাবেশে।তাকে দেখে সূর্য্য প্রশ্ন করেন।
-কি রে এতো দেরী করলি কেনো?
সমরের চোখের জল টলটল করছে মুখে তার উত্তর দেয়ার ভাষা যেন হারিয়ে ফেলেছেন।আবারো সূর্যের প্রশ্ন…
-কি রে কথা বলছিস না কেনো?কি হয়েছে?
নিজেকে স্বাভাবিক করতে কিছুটা সময় নেন সমর তারপর কতগুলো প্রশ্ন করেন সূর্য্যকে ।
-বলতো আমাদের জীবনের নিশ্চয়তা কি?এক দিকে রাজাকার বংশধরদের হুমকি খুন অন্য দিকে প্রতিবাদ করলে পুলিশের লাঠি চার্য।শুধু কি আমাদেরই দায়ীত্ত! রাষ্ট্র কিংবা দেশের আর কারো দায়ীত্ত নেই?
-কি হয়েছে খোলে বলবিতো?
-কি আর হবে,চিঠিতে হুমকি দেয় তোকে আজ আসার পথে কাকরাইলের মোড়ে আমাকে কয়েক জন টুপিওয়ালারা শাসালো।ভাগ্যিস ওরা আমাকে মেরে হাত পা ভাঙ্গেনি,
-এই….সভা বন্ধ কর….চল দেখি…..।
jhkhkhসভা অনিবার্য কারনে সংক্ষিপ্ত হওয়ায় আমরা দুঃখিত বলে প্রায় দুই তিনশ জন কাকরাইলের অভিমুখে পায়ে হেটে শ্লোগান দিতে দিতে যাচ্ছেন।একটি রাস্তায় পুলিশের ব্যারিকেট ছিল তা ভেঙ্গে কিছু দূর যেতেই হঠাৎ পুলিশের লাঠি চার্য আর কাদানে গ্যাসে মিছিলটিও ছত্র ভঙ্গ হয়ে যায়।পুলিশের মাঝে এক অফিসার তাদের ওয়্যালেসে কথা বলছেন এক উর্ধতন কর্মকর্তার সাথে।অপর প্রান্তের কথার উত্তর দিচ্ছিলেন পুলিশ অফিসারটি।
-উপায় নেই স্যার,ওরা যে ভাবে আইন অমান্য করে রাস্তার ব্যারিকেট ভেঙ্গে যাচ্ছিল তাতে বাধ্য হয়েছি।
-তুমি কি জানো ওরা ক্ষমতাশালীদের লোক,ওরা রাজাকারের ফাসির দাবীতে আন্দোলন করছে।
-জানি স্যার,
-তবে কেনো এমন এ্যাকসানে গেলে?তোমাদের জন্য আমাকে অনেক কথা শুনতে হবে জবাব দিহীতা করতে হবে চার আনার এমপি মন্ত্রীদের কাছে ওভার…বলে কথা বন্ধ করলেন।
এরই মাঝে এক সহকারী অফিস্যারের ওয়্যারলেস আসে।
-হেলো….স্যার মিছিলটি আবারো সক্রিয় হচ্ছে।
-তাহলে এবার জল কামান চালাও….. সাথে রাবার বুলেট।ওভার….।

xgxgxমুহুর্তে ফের দাড়ানো মিছিলটির উপর পুলিশের আরো এক বার হামলা হলো।ঝর্নার ন্যায় অনবরত রাবার বুলেটের পাশাপাশি আসল বুলেটও ছাড়তে ভূল করেননি কোন এক রাজাকার সাপোর্টের পুলিশ।মুহুর্তে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ছটফট করছে তর তাজা একটি প্রান।স্তব্ধ হয়ে যায় জন চঞ্চল ময় শহর।সমর অভি সূর্য্য কে কোথায় কেউ কাউকে দেখছেন না হয়তো যে যেদিকে পেরেছেন জান বাচা ফরজ করেছেন।পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে সূর্য্য অভি একত্রিত হলেও সমর আর স্বর্নাকে দেখতে পারছেন না কোথাও।অভি ওদের দু’জনের মোবাইলে রিং করে স্বর্নাকে মোবাইলে পেলেও সমরকে পেলেন না।
-হ্যালো,স্বর্না তুমি এখন কোথায়।
উত্তর শুনার আগেই লাইনটি কেটে যায়।আবারও রিং ঢুকানোর চেষ্টা স্বর্নার মোবাইলে….মোবাইল বিজি দেখাচ্ছে।অভির মনে হচ্ছিল রাগে মোবাইলটারে ভেঙ্গে ফেলেন।কিন্তু উপায় কি এই একটি মাধ্যমই বিপদে দ্রুত স্বজনদের খোজ নেয়া যায়।সে আবারও রিং দেন স্বর্নাকে।রিংটি রিসিভ হওয়াতে স্বস্তিতে নিঃস্বাস ফেলেন অভি।
-হ্যালো,হ্যা আমি অভি,,,তুমি কোথায়?সমরকে..তো ফোনে পাচ্ছিনা।
কেদে ফেলেন স্বর্না,কান্নার স্রোতের তীব্রতায় ঠিক মত কথা বলতে পারছেন না সে।
-আমি…আমি হাসপাতালে…সমর অপারেসন রুমে।রাবার বুলেটে তার বুক পিঠ ঝাঝরা হয়ে গেছে।
ফোনে কথার মাঝে সূর্য্য অভির কাছ হতে বার বার জানার চেষ্টা করছে কি হয়েছে,সমর স্বর্নারা এখন কোথায় কেমন আছেন।অভি কোন কথা না বলেই কামন…ফলো মি হাসপাতাল যেতে হবে বলে দ্রুত একটি সি এন জি নিয়ে প্রস্থান নেন।

চলবে,

 (y) কোন হ-য-ব-র-ল নয় চাই সামাজিক ও রাষ্টীয় ভাবে সমূলে রাজাকারদের বয়কট  এবং সংবাদ মাধ্যমগুলোকে  রাজাকার কে রাজাকার বলাতে বাধ্য করতে হবে।

প্রজন্মের ঋণ শোধ ২৩ তম পর্ব পড়ুন
ছবি:সংগৃহীত অনলাইন।

মুজাহীদের অপরাধ সম্পকিত একটি ভিডিও

Leave a comment